চিঠির মাধ্যমে বোমা পাঠিয়ে হত্যা করার কৌশল প্রথম আবিষ্কার করে। এছাড়াও ইরাকের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র উড়িয়ে দেওয়ার মতো দুঃসাহসিকতাও রয়েছে মোসাদের।
মোসাদকে অনেকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের ফুসফুসও বলে থাকে। দেশের ভরসা ও শত্রুদের সাক্ষাৎ যমদূত মানেন কেউ কেউ। সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র বাঁচানোর জন্য ইসরায়েল যেভাবে আয়রন ডোম ব্যবহার করে, তেমনি মোসাদ ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষায় ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
মোসাদের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ন মনে করতেন গোয়েন্দাবৃত্তি ইসরায়েলের প্রথম ডিফেন্স লাইন। টার্গেট দেশ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, সন্ত্রাস দমন ও অপারেশনের পর এগুলো গোপন রাখা হচ্ছে মোসাদের প্রধান কাজ। এটি ইসরায়েলের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের কাজের রিপোর্ট ও গোয়েন্দা তথ্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হয়। এর নীতিমালা ও কার্যক্রম অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ, যুক্তরাজ্যের এমআই সিক্স ও কানাডার সিএসআইএস’র অনুরূপ।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে অপহরণ, হত্যা, গুমসহ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে মোসাদকে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ মানা হয়। মূলত ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রশ্নে বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও কর্মকাণ্ড মোসাদকে গোয়েন্দাবৃত্তিতে সর্বোচ্চ মান দিয়েছে। দুর্ধর্ষ এই গোয়েন্দা সংস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন প্রতিহত করা ও আরব বিশ্বসহ মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।
ইসরায়েল প্রসঙ্গে বিতর্কিত বা রাজনৈতিক প্রশ্ন নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী বাদানুবাদ তৈরি হলে এ সংস্থা তার কর্মীদের ওই ব্যক্তি বা সংশ্লিষ্ট কাউকে অপহরণ বা হত্যা পর্যন্ত করত। মোসাদের এ ধরনের সংশ্লিষ্টতার জ্বলন্ত কোনো প্রমাণ না থাকলেও বিশ্বের নানা প্রান্তে জঘন্য সব গুপ্তহত্যার সঙ্গে প্রায়শ মোসাদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেছে।
জাদরেল এই গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঠিক সংখ্যা আজও জানে না কেউ। তবে অনেকে ধারণা করেন, কম করে হলেও ১ থেকে দেড় হাজারের মতো সদস্য হবে। অবশ্য ১৯৮০ সালের শেষদিকে এ সংখ্যা ২ হাজারের বেশি ছিল। মোসাদ সামরিক সার্ভিস না হলেও এর অধিকাংশ কর্মকর্তাই ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের।