কারবালার ঘটনাই শুধু আশুরায় ঘটেনি। বরং আবহমানকাল থেকেই চলে আসছে আশুরার ঐতিহ্য। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হিজরত করে মদিনায় পৌঁছেন, তখন তিনি দেখলেন মদিনার ইহুদি সম্প্রদায় আশুরার দিন রোজা রাখছেন।
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, আশুরার দিন তোমরা রোজা রাখো কেন? তারা উত্তর দিল, এটি একটি মহান দিন, এ দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন এবং ফেরাউন ও তার বাহিনীকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মুসা (আ.) রোজা রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার রোজা পালন করে থাকি।
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মুসা (আ.)-কে অনুসরণের ব্যাপারে আমরা তাদের চেয়ে বেশি হকদার। এরপর থেকে তিনি নিজে আশুরার রোজা রাখেন এবং উম্মতকে তা পালন করতে নির্দেশ দেন। (বুখারি: ৩৩৯৭; মুসলিম: ১১৩৯)। তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে যাতে মিলে না যায় সেজন্য দুটি রোজা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
আশুরায় সংঘটিত আরও কিছু ঘটনা
এক. মহান আল্লাহ আদি পিতা আদম (আ.)-কে এদিন জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠান। আবার এদিন তিনি আদম (আ.)-এর দোয়া কবুল করেন। এছাড়াও এ দিনেই সমগ্র মানবজাতির মা ও আদম (আ.)-এর স্ত্রী হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে পৃথিবীতে প্রথম সাক্ষাৎ হয়।
দুই. মহান আল্লাহর নবী নুহ (আ.)-এর জাতির লোকেরা আল্লাহর নাফরমানি করেছিল। বারবার সতর্ক করার পরও তারা আহ্বানে সাড়া না দেয়ায়, আল্লাহর শাস্তি মহাপ্লাবনে নিপতিত হয়। দীর্ঘ প্লাবন শেষে মহররমের ১০ তারিখে তিনি নৌকা থেকে ঈমানদারদের নিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসেন।
তিন. মহান আল্লাহর নবী আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর কঠিন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি এ দিনে মহান আল্লাহর রহমতে পূর্ণ সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য লাভ করেন। (ইমদাদুল মুফতিয়িন: ১/৯৬)