আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে ২৫৬ কোটি টাকার বেশি
আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনাযক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আগামী ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে তাকে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের এই মামলায় মোট ১৫ জনকে আগামী ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পৃথক দিনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গত ১৭ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে শেয়ার বাজারে অর্থ লোপাটের মামলাটি দায়ের করেন। পরে ১৬ জুন আদালত তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন-সাকিবের মা শিরিন আক্তার, সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক আবুল খায়ের, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, জাভেদ এ মতিন, জাহেদ কামাল, হুমায়ূন কবির ও তানভীর নিজাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফাটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফাটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করত। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বৃদ্ধি করে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করত। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন এবং চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের বাজার কারসাজির ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং ওই অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজার থেকে অর্জিত অস্বাভাবিক ক্যাপিটাল গেইন বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করে উৎস গোপন করার অভিযোগও রয়েছে। এতে আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানও সহযোগিতা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্যাপিটাল গেইনের নামে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা স্থানান্তরের তথ্যও মামলায় যুক্ত আছে।
দুদকের অনুসন্ধানে সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরুর ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর গত ১৭ জুন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।


