তীব্র ঠান্ডা ও তুষারপাতে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক,উইসকনসিনসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুই সপ্তাহ ধরে শুরু হওয়া অসহনীয় এ ঠান্ডা ও শীতকালীন ঝড়ে এখন পর্যন্ত ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকা।
রোববার (২১ জানুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় থেকে উত্তর-পূর্ব এবং মিসিসিপি পর্যন্ত দক্ষিণে চলতি সপ্তাহে অন্তত নয়টি অঙ্গরাজ্যে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। ঘন বরফে আচ্ছাদিত সড়কপথে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্কুল বন্ধ করা হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং ৮ হাজারের মতো ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। টেনেসি অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ এ পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ওরেগনের কর্মকর্তারা ১৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
ওরেগনের কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার বরফের ঝড়ের সময় পোর্টল্যান্ডের একটি পার্ক করা গাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জন নিহত হয়েছেন। পরে একটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেনটাকিতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট পাওয়ার আউটেস ইউএস জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তুষারঝড়ে ওরেগনের ৭৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন ছিল। এর পরই রাজ্যের গভর্নর রাজ্যটিতে জরনর অবস্থা ঘোষণা করেছেন। পেনসিলভানিয়ার পুলিশ বুধবার বলেছে নিউ ইয়র্কের পাঁচ জন নারী নিহত হয়েছেন। ইলিনয়, কানসাস, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউ ইয়র্ক, উইসকনসিন এবং ওয়াশিংটন রাজ্যেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কিছু অঙ্গরাজ্যে তীব্র তুষারপাত হচ্ছে। গভীর বরফের সময় চালকদের রাস্তায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। মিসিসিপির কর্মকর্তারা এর বাসিন্দাদের ‘রাস্তায় কালো বরফ সম্পর্কে সচেতন হতে এবং প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।’
খবরে বলা হয়েছে, মেমফিসে এত পাইপ ভেঙে গেছে যে সারা শহরে পানির ওপর চাপ পড়েছে। মেমফিস তাদের ৪ লাখের বেশি গ্রাহককে খাবার পানি ও দাঁত ব্রাশ করার জন্য বোতলজাত পানি সরবরাহ করার চেষ্টা করছে। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে পানি ফুটিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তীব্র ঠান্ডা ও তুষারপাতে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অনেক এলাকায় হিমাঙ্কের ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে নেমেছে তাপমাত্রা। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ওরেগন থেকে মেইন প্রদেশ পর্যন্ত জরুরি অবস্থার আওতায় ৭ কোটির বেশি মানুষ। হাইপোথার্মিয়া ও সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ছে প্রাণহানি।
শুক্রবার আরেক দফা তুষারপাতের কবলে পড়ে দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। বিভিন্ন সড়কে জমে আছে ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পুরু বরফের স্তর। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে টেক্সাস। ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হয়েছে আইওয়ায়। বিরূপ আবহাওয়ার শিকার ফিলাডেলফিয়াও।