বাংলাদেশও প্রস্তুতি নিয়েই গেছে। প্রথম টেস্টের দলে আছেন ৪ পেসার। প্রথম টেস্টে খেলতে পারেন ৪ জনই, নিশ্চিত করেছেন দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ। আর এখন তো দ্বিতীয় টেস্টটাও করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে চলে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল—পেসারদের জন্য এই উইকেট কি এতটাই সহায়ক? রাওয়ালপিন্ডির সাম্প্রতিক ইতিহাস কী বলছে?
রাওয়ালপিন্ডির উইকেট সম্পর্কে ধারণা পেতে গত ৫ বছরে এই মাঠে হওয়া টেস্ট ম্যাচগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। ২০১৯ সালে এখানেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ১২ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট খেলে পাকিস্তান। এরপর এই মাঠে টেস্ট হয়েছে আরও ৪টি। অর্থাৎ গত ৫ বছরে রাওয়ালপিন্ডিতে ৫টি টেস্ট হয়েছে। সংখ্যাটা কম, কারণ, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান–ইংল্যান্ড টেস্টের পর এই মাঠে আর টেস্ট ম্যাচ হয়নি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া সর্বশেষ টেস্টটিই অবশ্য ইতিহাসের অংশ। সেই টেস্টের প্রথম দিনে মাত্র ৭৫ ওভার ব্যাটিং করেই ৪ উইকেটে ৫০৬ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। টেস্ট ইতিহাসে টেস্টের প্রথম দিনে কোনো দলের ৫০০ রান তোলার রেকর্ড এটিই। আলোকস্বল্পতায় সেদিন খেলা হয় ৭৫ ওভার। পুরো ৯০ ওভার খেলা হলে না জানি কত রান হতো! সেই টেস্টে পাকিস্তানও প্রথম ইনিংসে করেছিল ৫৭৯ রান।
ঠিক এতটা না হলেও এখানে খেলা ৫ টেস্টের ৩টিতেই বেশ রান উঠেছে। সবচেয়ে কম রান উঠেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্টে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ মাঠে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ও ৪৪ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করে ১৬৮। সেই টেস্টে বাংলাদেশের ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের পেসাররা। ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন নাসিম শাহ। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদিও। দুজনই এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
সর্বশেষ ৫ টেস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে পেসাররা উইকেট নিয়েছেন ৭৭টি। উইকেটপ্রতি রান দিয়েছেন ৩৫ করে, ওভারপ্রতি ৩.১৮। সেই তুলনায় স্পিনাররা কিছুটা নিষ্প্রভ। ৫ টেস্টে তারা উইকেট নিয়েছেন ৪৬টি। একটি উইকেট নিতে রান খরচ করেছেন ৫৫.৬৭ করে। স্পিনারদের চেয়ে পেসাররা যে রাওয়ালপিন্ডিতে বেশি সুবিধা পান, সেটা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
তবে বোলারদের তুলনায় ব্যাটসম্যানরাই বোধ হয় বাড়তি সুবিধা পান রাওয়ালপিন্ডিতে। সর্বশেষ ৫ টেস্টে এখানে ব্যাটসম্যানদের গড় প্রায় ৪২ (৪১.৯০)।
অর্থাৎ ব্যাটসম্যানরা নিজের কাজটা করতে পারলে রাওয়ালপিন্ডির উইকেটেও রান করা সম্ভব। মুশফিক, সাকিব, নাজমুলরা সেই সুবিধাটা নিতে পারলেই হয়!