বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্যসহ চার জনের একটি টিম। এর আগে বিকাল ৩টায় তারা ঢাকায় এসে পৌঁছায়। পরে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস হয়ে বিকালে তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদর দফতরে আসে এবং সেখানে বৈঠক করেন। এরপর সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ে আসেন তারা।
ডিবি সূত্র জানায়, ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা নিহত আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশে গ্রেফতার তিন আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ভারতীয় নাগরিক গ্রেফতারের বিষয়েও আলোচনা হবে। বর্তমানে তারা গোয়েন্দা পুলিশ ওয়ারী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
ডিবি জানায়, ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর কর্মকর্তা অন্তু কুমার ও জয়দীপসহ চার জন এমপি আজীম হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃত অপরাধীদের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করছেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আজীম। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন তিনি। এরপর ১৩ মে তাকে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়েছে বলে জানায় ডিবি।
এদিকে বুধবার (২২ মে) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন! এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থি নেতা আমান উল্লাহ আমানকে। কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসে শাহীন। পরে আমানসহ ছয় জন মিলে এমপি আজীমকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ফেলে দেয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া চরমপন্থি দল পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানসহ তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় তার মেয়ে ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। একইসঙ্গে কলকাতায়ও পৃথক একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। কলকাতার পুলিশ লাশের টুকরো বহনকারী এক প্রাইভেটকারের চালককে আটক করেছে।