মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫
27 C
Dhaka
Homeজেলার খবরফটিকছড়ির এক চেয়ারম্যানের উন্নয়নের সাফল্যগাঁথা,উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী

ফটিকছড়ির এক চেয়ারম্যানের উন্নয়নের সাফল্যগাঁথা,উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী

প্রকাশ: অক্টোবর ১২, ২০২৫ ৫:৪৯

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সমিতির হাট ইউনিয়ন।এক সময়ের অবহেলিত এ জনপদটি এখন উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

গত এক দশকের মধ্যেই (২০১৬-২০২৪) এ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে, জনবহুল গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে আধুনিক অবকাঠামো ও দৃশ্যমান উন্নয়নের ছোঁয়া।সমিতিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ ইমন ওরফে কালু চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দলমত নির্বিশেষে যে উন্নয়নযাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ সমিতিরহাটকে একটি আধুনিক, সংযুক্ত ও জনবান্ধব এলাকায় রূপ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

তার সময়ে সড়ক ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে বিপ্লব হয়েছে, স্বাধীনতার পর এত ব্যাপক সড়ক উন্নয়ন সমিতিরহাটে আর দেখা যায়নি। ইউনিয়নের যোগিরহাট–কাটিরহাট সড়কের কার্পেটিং, নানুপুর–সমিতিরহাট সড়ক, সমিতিরহাট–তকিরহাট সড়ক, হালদা নদীর বেড়িবাঁধ ও ব্লক নির্মাণ, কুলাল বাড়ি সড়ক, উত্তর নিশ্চিন্তাপুর সড়ক, খোশাল মুন্সি বাড়ি সড়ক, সাজু খাঁ সড়ক, আমির মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ি সড়ক, রফিকুল আনোয়ার সড়ক, লাঁতুশাহ সড়ক, আজগর আলী শাহ সড়কসহ অসংখ্য সংযোগ সড়ক গ্রামীণ জনগণের জীবনে এনেছে আমূল পরিবর্তন।এছাড়া সমিতির হাট হতে রহমানিয়া বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটির উন্নয়নকে এলাকাবাসী বলছেন “স্বাধীনতার পর স্মরণকালের উন্নয়ন।”

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে কালু চেয়ারম্যানের সময়ে।
সমিতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ শিক্ষাখাতে ঘটে ব্যাপক বিপ্লব। পূর্ব সাদেক নগর, দক্ষিণ সাদেক নগর, দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর ও মধ্যম নিশ্চিন্তাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন ও সমিতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ তলা ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তার নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত নূরছাফা মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, সমিতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি ক্রয়ে ব্যক্তিগত অনুদানসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তিনি। শিক্ষাখাতে তার এই অবদানই ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিয়েছে একটি শক্তভীত।

খাল খনন ও সেচ প্রকল্পে কারণে হয়েছে কৃষি বিপ্লব। সমিতিরহাট ইউনিয়নের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে খাল খনন ছিল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। চেয়ারম্যান কালুর সময় ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে তিনটি খাল এবং ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে আরও একটি খাল খনন করা হয়। এর ফলে সেচের পরিধি বেড়ে কৃষিতে আসে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এছাড়াও ২, ৪, ৫, ৬ ও ৭নং ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত সেচ প্রকল্পগুলো উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে ইউনিয়নের অর্থনীতিকে করেছে আরও শক্তিশালী।

পুল, কালভার্ট নির্মাণ ও অবহেলিত জনপদের উন্নয়নেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে এ ইউনিয়নে। গত এক দশকে সমিতিরহাটে ২৫টি নতুন পুল ও কালভার্ট নির্মিত হয়। দুর্গম জনপদগুলো যুক্ত হয় উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে।এলাকাবাসী বলছেন, “কালু চেয়ারম্যান না থাকলে এসব উন্নয়ন হয়তো স্বপ্নই থেকে যেতো।”

মানবিকতা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়ও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যা এবং কোভিড–১৯ মহামারির সময় কালু চেয়ারম্যানের মানবিক ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে আছে সমিতিরহাটবাসীর হৃদয়ে।
করোনা কালে চালু করেন ‘করোনা সহায়তা ডেস্ক’, ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন ত্রাণ ও ওষুধ। বন্যা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে আশ্রয়, পুনর্বাসন ও সহায়তা দিয়েছেন নিরলসভাবে।
এলাকাবাসীর ভাষায়, “বিপদে-আপদে আমাদের পাশে যে মানুষটিকে পাওয়া গেছে, তিনি হলেন এই কালু চেয়ারম্যান।”

এছাড়াও এই ইউনিয়নে নির্মিত হয় সাইক্লোন সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বহু স্থাপনা। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা ও দুর্যোগ প্রস্তুতিতে এগিয়ে এসেছে সমিতিরহাট ইউনিয়ন।

গত এক দশকে ফটিকছড়ির সমিতিরহাট ইউনিয়ন, নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। উন্নয়ন, মানবিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে এই হারুনুর রশিদ কালু চেয়ারম্যান স্থান করে নিয়েছেন এলাকার মানুষের হৃদয়ে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর